Monday, January 3, 2022

আই হেট নিউ ইয়ার্স ডে।। আন্তনীও গ্রামসি


সাজ্জাদ স্যারের বদৌলতে আন্তনীও গ্রামসির I Hate New Year’s Day নামে এই পিচ্ছি নিবন্ধ/মন্তব্য পড়ার সুযোগ পেলাম। লেখাটি মূলত প্রকাশিত হয় ১৯১৬ সালের ১ জানুয়ারি। Avanti!-তে।আমি যেটা পড়েছি সেটা প্রকাশিত হয় জেকোবিনে; ২০১৬ সালে। ২০২২ সালের নববর্ষের দিনে লেখাটা পড়েছি, অইদিনই অনুবাদ করে ফেলি গরম-গরম অবস্থায়। অনুবাদে পরিভাষাগত কিছু ভুলত্রুটি থাকতে পারে। গোচরে আনলে কৃতজ্ঞ থাকবো। শুরুতেই তাই শুকরিয়া জ্ঞাপন করে দিচ্ছি। 
 
মূল নিবন্ধ

প্রত্যেক সকালে আমি যখন আকাশ তলে জেগে উঠি আবারো, আমার মনে হয় এটাই আমার জন্য নববর্ষের দিন।

এই কারণেই নিশ্চল অপরিপক্কতার মতো ভূপতিত হয় এমন নববর্ষকে আমি ঘৃণা করি। এটা মানবাত্মাকে [হিউম্যান স্পিরিট] একটি বাণিজ্যিক উদ্বেগে পর্যবসিত করে; সেখানে থাকে মোট আয়-ব্যায়, বকেয়ার পরিমাণ এবং নতুন ব্যবস্থাপনার বাজেট। এগুলো জীবন ও আত্মার ধারবাহিকতাকে খুইয়ে দেয়। আপনি আসলেই চিন্তা করা শুরু করে দেন যে, এই বছর এবং পরবর্তী বছরের মধ্যে একটি ছেদ রয়েছে, একটি নতুন ইতিহাস শুরু হতে যাচ্ছে; আপনি নতুন সিদ্ধান্ত বানান, সিদ্ধান্তহীনতার জন্য অনুশোচনা করেন, এবং এভাবেই চলতে থাকে। সাধারণত তারিখ সম্পর্কিত ভাবনায় এই ভুলটাই হয়ে থাকে।

ওনারা বলেন যে, কালপঞ্জিই ইতিহাসের মেরুদণ্ড। ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের এটাও মেনে নেয়ার জরুরত রয়েছে যে, প্রত্যেক ভালো লোক তাদের মস্তিষ্কে চার বা পাচটা মৌলিক/প্রধান তারিখ সেটে রাখেন, যেগুলো ইতিহাসে খুব বাজে কৌশল খেলেছে। নববর্ষও তেমনি। রোমান ইতিহাস বা মধ্যযুগ বা আধুনিক যুগের নববর্ষ।

এবং এগুলো এতোটাই ক্ষতিকর ও সেকেলে যে, আমরা মাঝেমধ্যে ধরেই নেই যে, ইতালিতে ৭৫২ সালে জীবন শুরু হয়েছে, এবং ১৪৯০ বা ১৪৯২ সাল যেন পর্বতন্যায় যখন মানবতা এগুলোকে টপকে হঠাত করে এক নতুন জগতে প্রবেশ করেছে, এক নতুন জীবন জীবনে এসেছে। ফলে সিনেমায় যেমন করে ফিল্ম ছিড়ে গেলে ঝলসানো আলোর বিরাম তৈরি হয়, তেমনি ইতিহাস যে কোনো আকস্মিক ছেদ ব্যতীত একই মৌলিক অপরিবর্তীয় রেখা বরাবর ধারবাহিকভাবে উন্মোচিত হতে থাকে- এটা দেখার জন্য তারিখ একটি বাধা ও প্রাচীর হয়ে যায়।

এই কারণে আমি নববর্ষকে ঘৃণা করি। আমি চাই প্রতিটি সকাল আমার জন্য হয়ে উঠুক নববর্ষ। প্রতিদিন আমি নিজের সাথে বিবেচনা করতে চাই, প্রতিদিন আমি নিজেকে নবায়ন করতে চাই। বিশ্রামের জন্য আলাদা কোনো দিন নেই। আমার বিরতিগুলো আমি নিজেই বেছে নেই; যখন আমি জীবনের তীব্রতায় মাতাল বোধ করি, এবং নতুন জীবনীশক্তি আহরণ করতে পশু-প্রবৃত্তিতে ডুব দিতে চাই।

কোনো আধ্যত্মিকতায় সময় নষ্ট করা নয়; আমি চাই আমার জীবনের প্রতিটি ঘন্টা হোক নতুন, যদিওবা সেগুলো যুক্ত থাকবে অতীতের সাথে। বাধ্যতামূলক যৌথ ছন্দে আর কোনো উদযাপন নয়, যাদেরকে আমি পরোয়া করি না এমন অপরিচিতদের সাথে ভাগাভাগি করে করে কোনো উদযাপনের দিন নয়। আমাদের দাদার দাদা দাদা উদযাপন করেছে বলে আমাদেরকেও উদযাপন করার তাগিদ অনুভব করতে হবে। এটা খুবই বিরক্তিকর!

আমি এই কারণেও সমাজতন্ত্রের অপেক্ষা করছি। কারণ যে তারিখগুলোর সাথে আমাদের আত্মার কোনো অনুরণন নেই সেগুলোকে এটা ছুড়ে ফেলে দিবে ভাগাড়ে, এবং যদি এটা নতুন তারিখ তৈরিও করে, সেটা হবে অন্তত একান্তই আমাদের; নির্বোধ পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পেয়েছি বলেই বিনা-আপত্তিতে গ্রহণ করা হবে এমন তারিখ নয়।

No comments:

Post a Comment